You are currently viewing ডিএনএস কিভাবে কাজ করে (প্রথম পর্ব)

ডিএনএস কিভাবে কাজ করে (প্রথম পর্ব)

ডোমেইন নেইম রিসলভিং যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো এই ডিএনএস। ডিএনএস কিভাবে কাজ করে? ডোমেইন কিভাবে রিসলভ হয়? টেকি হন বা না হন, সবার জন্য ডিএনএস কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে আমার ছোট্ট (মিসা কথা) প্রয়াস। অনেকে আমাকে গত কয়েক দিনে মেসেজ করেছেন ডিএনএস রিসলভার নিয়ে লিখতে, তাদের জন্য এই ডেডিকেশন। কথা দিলাম পুরোটা পড়ে যদি কোন মজা না পান তবে পয়সা ফেরত। জীবনে কখনও যদি মনে প্রশ্ন জেগে থাকে ওয়েব সাইট কিভাবে কাজ করে, তবে আপনার জন্যই এই লেখা।

ডোমেইন নেইম রিসলভিং এ যাবার আগে আমাদের সার্ভার নিয়ে একটু প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। যাদের কাছে সার্ভার শব্দ পড়তে কষ্ট হয় বা শুনলেই মাথা আউলা হয়ে যায়, তারা সার্ভারের জায়গায় পড়ুন কম্পিউটার ব্যাস তাহলেই হবে। জ্বি হা সার্ভার আসলে আর কিছুই না আপনার পিসি বা ল্যাপটপের মতই একটা শক্তিশালী কম্পিউটার। যাতে স্পেশাল সার্ভার অপারেটিং সিষ্টেম বা ওএস এর পাশাপাশি স্পেশ্যাল সার্ভার সফটওয়্যার ইন্সটল করা থাকে। সেই সাথে থাকে খুবই পাওয়ারফুল ইন্টারনেট কানেকশন। এটা আপনার ব্যবহার করা প্রায় পারসোনাল কম্পিউটারের মতই একটি কম্পিউটার, আর কিছুই না।

ধরেন, আপনি এখন facebook.com ব্রাউজ করছেন। তখন এই সাইটের সব ড্যাটা, মানে আপনার একাউন্টের তথ্য, আপলোড করা সব ছবি, কমেন্ট, পোস্ট সব কিছু এই পৃথিবীর কোন না কোন একটা কম্পিউটারে (সার্ভারে) সংরক্ষণ করা আছে। আপনি যখন ব্রাউজ করেন আপনার ব্রাউজার সেই কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করে সেই ড্যাটা বা তথ্যগুলো আপনার সামনে এনে হাজির করে। সহজ জিনিস। এখন কথা হল, পৃথিবীতে তো বিলিয়ন বিলিয়ন কম্পিউটার আছে। তাহলে আপনার ব্রাউজার কিভাবে বুঝে যে এই বিলিয়ন বিলিয়ন কম্পিউটারের মাঝে কোন কম্পিউটারে facebook.com এর সব ড্যাটা রাখা আছে? সে তো ভুলে আমার কম্পিউটারে অথবা অন্য কারো কম্পিউটারেও তো চলে যেতে পারে, তাই না?

আচ্ছা পৃথিবীতে তো বিলিয়ন বিলিয়ন মোবাইল ফোন আছে। এই বিলিয়ন বিলিয়ন মোবাইলের মাঝে আপনাকে কল দিলে অর্থাৎ আপনার নাম্বারে ডায়াল করলে আমি আপনাকেই কিভাবে খুঁজে পাই? ইয়েস কারণ আপনার একটা ইউনিক সেল নাম্বার আছে, যা একদম ইউনিক। পৃথিবীর কারও সেল নাম্বারের সাথেই এই নাম্বার মিলে না। যার কারণে বিলিয়ন বিলিয়ন ইউজারের মাঝেও আমি সহজেই আপনাকে খুঁজে পাই। ঠিক একই রকম পৃথিবীর সব ইন্টারনেট কানেক্টেড কম্পিউটারের একটা ইউনিক সেল নাম্বার থাকে। যে নম্বরে কল দিলে সেই কম্পিউটারকেই বুঝায় অন্য কাউকে না। আর কম্পিউটারের এই ইউনিক সেল নাম্বারকে বলা হয় ইন্টারনেট প্রটোকল বা আইপি এড্রেস। এই আইপি এড্রেস দেখতে অনেকটা এমন হয় 55.66.73.11 আরেক ধরণের আইপি এড্রেস আছে যাকে বলা হয় IPv6 দেখতে অনেকটা এমন 2001:cdba::3257:9652, তবে আমি  IPv6 এর আলোচনায় যাব না।

আইপি এড্রেসও আপনার সেল নাম্বারের মতই ইউনিক হয়। মানে কারও আইপির সাথে কারও আইপি মিলে না (শেয়ার্ড আইপি নিয়ে অন্য কোন দিন বলবো)। যেমনঃ facebook.com এর আইপি হল 31.13.65.36। তার মানে যে কম্পিউটারে facebook.com এর সব ড্যাটা রাখা আছে তার ঠিকানা এই 31.13.65.36 যদিও ফেইসবুকের একাধিক আইপি আছে। সেটা অন্য পদ্ধতি। 31.13.65.36 এই আইপিটা আপনার ব্রাউজারের এড্রেস-বারে কপি পেস্ট করে এন্টার চাপুন। দেখেন তো কি হয়। যারা জীবনে প্রথমবার এমন দেখলেন আশা করি অনেক মজা পেয়েছেন?

সামনে আরও মজা আছে পড়তে থাকুন। এখন ধরেন আমি facebook.com ভিজিট করতে চাই, কিন্তু এই সাইটের সব তথ্য রাখা আছে যে সার্ভারে তার আইপি নাম্বার 31.13.65.36 এখন কোনভাবে যদি আপনার ব্রাউজারকে জানানো যায় যে facebook.com এর সব ড্যাটা যে কম্পিউটারে রাখা আছে তার আইপি 31.13.65.36 তাহলে ব্রাউজার এক লাফে সেই সাইটকে আপনার সামনে হাজির করতে পারবে। বাট কথা হল আপনার ব্রাউজার এই আইপি জানবে কিভাবে? নাকি সে পৃথিবীর সব ওয়েবসাইটের আইপি মুখস্থ করে বসে থাকে?

১৭/০৪/২০২২, ০৩.৫৫ PM

[চলবে]

Leave a Reply